পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ‘বাহাদুর’ নামের একটি ষাঁড় সবার নজর কেড়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ষাঁড়টি দেখতে আসছেন। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বাহাদুরের দাম চাওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়টি পালন করছেন নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল গ্রামের কলেজ শিক্ষক মাহমুদ হাসান মুক্তা। তিনি ২০১০ সালে শখের বশে ৪টি গরু নিয়ে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ১০টি গাভী, ৯টি বাছুর আর একটি ষাঁড় রয়েছে। মূলত গাভী পালন করলেও তিনি কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছর তার খামারে ২-১টি বড় আকারের ষাঁড় পালন করেন।
মাহমুদ হাসান মুক্তা জানান, এ বছর কোরবানি ঈদ উপলক্ষে করে শুধু বাহাদুর নামের গরুটিই পালন করেছেন। দুই বছর আট মাস ধরে পরম যত্নে বাহাদুরকে তৈরি করেছেন তিনি। ভুট্টা, জব, খেসারি ও গমের ভুসি সহযোগে তৈরি করা বিশেষ খাবার বাহাদুরের প্রিয় খাবার। প্রতিদিন সকাল আর বিকালে প্রয়োজন হয় ৭-৮ কেজি করে। এর সঙ্গে নিয়মিত নিজের জমিতে উৎপাদিত নেপিয়ার ঘাসও খেতে দেয়া হয় তাকে। নিয়ম করে খাবার খাওয়ানো, পরিচর্যা করার পাশাপাশি একজন পশু চিকিৎসকের পরামর্শে রেখে বাহাদুরকে তৈরি করেছেন তিনি।
বাহাদুর এখন উচ্চতায় পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি আর দৈর্ঘ্যে ৯ ফুট ৪ ইঞ্চি। গরুটি জবাই করলে ৩৫ মণ ১০ কেজি মাংস পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
ক্ষতিকর স্টেরয়েড ব্যবহার প্রসঙ্গে মুক্তা বলেন, কোনো স্টেরয়েড কখনই ব্যবহার করিনি। প্রাকৃতিক খাবার খাইয়েই গরুটিকে এত বড় করেছি। তিনি আরও বলেন, অনেক যত্নে বাহাদুরকে লালন করেছি। শৌখিন লোকেরাই বাহাদুরের কদর বুঝবে। তাদের দৃষ্টিতে আনতে পারলে এর দাম কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।
ইতোমধ্যেই তিনি অনলাইন প্লাটফর্ম বিক্রয় ডটকমে গরুটির বিক্রির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। এছাড়া ই-হাট বড়াইগ্রামেও এটির প্রচারণার ব্যবস্থা করার জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগের প্রতি দাবি জানান তিনি। বিক্রয় ডটকমে দেখে ইতোমধ্যে অনেকেই দরদাম করছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. উজ্জ্বল কুমার কুণ্ডু বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারিদের নতুন নতুন প্রযুক্তি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেয়ার পাশাপাশি প্রণোদনা দিচ্ছে। এতে উপজেলাজুড়ে প্রাণিসম্পদের যথেষ্ট সমৃদ্ধি ঘটেছে। বাহাদুরের মতো এত বড় গরু এ উপজেলায় আর নেই। ক্ষতিকর উপাদান ছাড়া লালন করা বাহাদুরের মালিক তার ন্যায্য দাম পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।